ঢাকা শনিবার
০৪ মে ২০২৪
২৮ এপ্রিল ২০২৪

বিএসইসি-বিএএসএম’র যৌথ উদ্যোগে ‘বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স’অনুষ্ঠিত


Reporter01
53

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বিএসইসি-বিএএসএম’র যৌথ উদ্যোগে ‘বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স’অনুষ্ঠিত Collected from google



নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটসের (বিএএসএম)’ যৌথ উদ্যোগে জেলাপর্যায়ে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রংপুর জেলাতে আয়োজিত হয়েছে ‘বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স’।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রংপুর নগরীর পর্যটন মোটেলে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। কনফারেন্সে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসইসি’র কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম। স্বাগত বক্তব্যে তিনি ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করার জন্য রংপুরবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, “পুঁজিবাজারে ঝুঁকি আছে। পুঁজিবাজারে আসার আগে দরকার কিভাবে বিনিয়োগ করবেন তা বোঝা। পুঁজিবাজারে অলস অর্থ বিনিয়োগ করবেন। কিভাবে আর্থিক ব্যবস্থাপনা করবেন তা জানা খুবই জরুরী। যদি জেনে বুঝে বিনিয়োগ করেন তবে তা থেকে দীর্ঘমেয়াদী রিটার্ন আসবে।” তিনি পুঁজিবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং নারীদের পুঁজিবাজারে আসার আহ্বান জানান। তিনি রংপুরে আয়োজিত বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স এর সাফল্য কামনা করেন।

কনফারেন্সে ‘Financial Planning’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসি’র উপপরিচালক জিয়াউর রহমান। তিনি বিনিয়োগের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে কিভাবে সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন।

কনফারেন্সে ‘Fundamentals of Financial Literacy’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শফিউল আজম। তিনি বিনিয়োগ শিক্ষার নানাদিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং কনফারেন্সে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের সকলকে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন।

কনফারেন্সে ‘Investment Risk and Investors protection’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি পুঁজিবাজারের ঝুঁকিসমূহ, বিনিয়োগের বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি, রিটার্ন ও ঝুঁকির মধ্যকার সম্পর্ক, বিনিয়োগের ঝুঁকি হ্রাসের কৌশলসমূহ, বিনিয়োগের বৈচিত্রায়ন, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্যবহুল আলোচনা উপস্থাপন করেন।

প্রবন্ধ উপস্থাপনার পর বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিআইসিএম’র নির্বাহী প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ তারেক, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি মো: রেজাউল ইসলাম, প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম ওমর তৈয়ব এবং ডিএসই’র পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও।

উক্ত প্যানেল আলোচনায় বিনিয়োগ শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা, দেশের উন্নয়নের জন্য আধুনিক আর্থিক খাতের প্রয়োজনীয়তা, দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারে উন্নয়নে করণীয় বিষয়সমূহসহ বাজারের নানা দিক নিয়ে আলোকপাত করা হয়। প্যানেল আলোচনার শেষাংশে অংশগ্রহণকারী বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নের-ভিত্তিতে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচকবৃন্দ বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নের উত্তর দেন।

কনফারেন্স অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি মো: আকবর আলী। তিনি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রংপুরের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন এবং রংপুর জেলাকে আগামীতে আরো এগিয়ে নিতে সকলের উদ্যোগ, সহযোগিতা ও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন বলে জানান। তিনি বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্সের আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

এরপর কনফারেন্সের প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএসইসি’র কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি অন্যান্যের মধ্যে বলেন, “সত্যিকার অর্থেই আমাদের দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আগামীতে উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে আমাদের কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালের মাঝেই বাস্তবের সোনার বাংলা পাবো আমরা যার জন্য পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে হবে। সোনার বাংলা গড়তে আমাদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আপনাদের সঞ্চয় যেন দেশ ও দশের এবং আপনাদের নিজেদের উন্নয়নে কাজে আসে তা নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “আপনাদের নিজেদের ও স্বশিক্ষিত ও সচেতন হতে হবে। শুধু বিনিয়োগকারী নয়, বাজার অংশীজনদের ও আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি যার জন্য বিএসইসি, বিআইসিএম, বিএএসএম কাজ করছে। ঝুঁকি থাকবেই তাই ঝুঁকি বুঝতে হবে, জানতে হবে। আমরা নিয়মিত বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ আয়োজন করছি। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষের সাথে আমরা যুক্ত হচ্ছি। আমরা সকলকে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে কাজ করছি। এছাড়াও বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কাজ করছি এবং পুজিবাজারে আরো বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্ট নিয়ে আসতে কাজ করছি। বিএসইসি আগামী বছরে লিস্টেড প্রোডাক্ট বাড়ানো এবং পুঁজিবাজার কেন্দ্রিক কর্মকান্ডগুলোকে ডিজিটালাইজেশন এই দুটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।” বিএসইসি পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ও তাদের সুরক্ষায় সদা সচেষ্ট আছে বলে তিনি জানান। তিনি সফলভাবে রংপুরে ‘বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স’ আয়োজনে সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং রংপুরবাসীদের শুভেচ্ছা জানান। বিনিয়োগকারীদের কষ্টার্জিত সম্পদ যেন নিরাপদ থাকে এবং তারা যেন আস্থার সাথে পুঁজিবাজারে সংযুক্ত থাকতে পারেন সেই আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, ‘বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স’ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে লাইভ সম্প্রচারিত হয়।


আরও পড়ুন:

বিষয়: