ঢাকা বৃহস্পতিবার
০২ মে ২০২৪
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ৫% নগদ সহায়তা দাবি


নিউজ ডেস্ক
138

প্রকাশিত: ০৩ মে ২০১৯
পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ৫% নগদ সহায়তা দাবি



স্টাফ রিপোর্টার : শ্রমিকের মজুরি ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিসহ পাঁচ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশের পোশাক শিল্পের জন্য আগামী তিন বছরের জন্য ৫ শতাংশ নগদ সহায়তা চেয়েছেন পোশাক শিল্পের প্রতিনিধিরা। বৃহস্পতিবার, ০২ মে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সভায় এ দাবি তোলেন তারা। ডিসিসিআই ভবনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি ছিলেন পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক। সভার শুরুতে ‘প্রিয়েম্বেল টু সাসটেইনেবিলিটি অব রেডিমেড গার্মেন্টস (আরএমজি) সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসির। তিনি বলেন, পোশাক খাতের শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, কমপ্লায়েন্স সম্পর্কিত ব্যয় বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে পোশাক খাতের পণ্যের মূল্য কমে যাওয়া এবং পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য ক্রেতার ক্রমাগত চাপের ফলে বৈশ্বিক বাজারে আমাদের তৈরি পোশাক খাতের বাজার হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক খাতের সব পণ্যের (প্রচলিত ও অপ্রচলিত) জন্য ৫ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দেয়ার প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি এ খাতের সামগ্রিক উন্নয়নে মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোরারোপের পাশাপাশি আগামী পাঁচ বছরের জন্য জ্বালানির মূল্য নির্ধারণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নেরও আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি। ডিসিসিআই সভাপতি জানান, ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশের পোশাকপণ্যের দাম প্রতি বছর গড়ে শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশ হারে কমছে। এর মধ্যে গ্যাসের প্রস্তাবিত বর্ধিত মূল্য কার্যকর করলে বিদ্যুতের মূল্য বাড়বে ৬০ শতাংশ। এতে পোশাক খাতের উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৯ শতাংশ বাড়বে। যেখানে এরই মধ্যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এ খাতের উদ্যোক্তাদের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানির মূল্য বাড়ালে তৈরি পোশাক খাতের পরিচালন ব্যয় বাড়বে—এ বিষয়ে একমত পোষণ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে দেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রস্তাবিত প্রণোদনা একান্ত আবশ্যক। বিভিন্ন বায়িং হাউজ ও এজেন্সির মাধ্যমে পণ্য কেনার কারণে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে উপযুক্ত দাম পাচ্ছে না উল্লেখ করে ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য কেনে, সেটি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান মন্ত্রী। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, শ্রীলংকা, বেলারুশ ও চেক রিপাবলিকের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ব্রাজিলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে। সভায় পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরিতে যথাক্রমে সরকার ও গণমাধ্যমের সহযোগিতা চান বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। তিনি এ খাতের সার্বিক উন্নয়নে উদ্যোক্তা-ক্রেতা প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক-গণমাধ্যম, গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সমন্বয়ের ওপর জোর দেন। গতকালের সভায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম, বেনজীর আহমেদ, বিজেএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল সামাদ, পরিচালক মীরান আলী, ইনামুল হক খান, মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন, বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, এইচএনএমের প্রতিনিধি রজার হুবার্ট, বেস্ট সেলারের সাসটেইনেবল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম, ইনডিটেক্সের মো. রেজাউল করিম ভূইয়্যা ও কামরুল হাসান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি হায়দার আহমদ খান, এফসিএ, বাংলাপোষাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল প্রমুখ। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই সহসভাপতি ইমরান আহমেদ, পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আকবর হাকিম, এনামুল হক পাটোয়ারী, হোসেন এ সিকদার, খন্দকার রাশেদুল আহসান, কেএমএন মঞ্জুরুল হক, ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন, মোহাম্মদ বাশীর উদ্দিন ও এসএম জিল্লুর রহমান। সভা শেষে ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

আরও পড়ুন:

বিষয়: