ঢাকা রবিবার
০৫ মে ২০২৪
২৭ এপ্রিল ২০২৪

টিকা কিনতে ৮০০০ কোটি টাকা


নিউজ ডেস্ক
199

প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২১
টিকা কিনতে ৮০০০ কোটি টাকা



বাংলাদেশকে করোনার টিকা কেনার জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৯৪ কোটি ডলার দেবে, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ পাওয়া নিয়ে এডিবির সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলছে। ‘এডিবি ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ে গতকাল বুধবার আয়োজিত এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ ও কর্মকর্তা সুন চাঙ হং। টিকা কেনার অর্থ ও বাজেট সহায়তা মিলিয়ে বাংলাদেশকে এডিবির প্রায় ১১৫ কোটি ডলার দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। সব মিলিয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে প্রায় ২০০ কোটি ডলার বা ১৭ হাজার কোটি টাকা পেতে পারে বাংলাদেশ। টিকা প্রদান কর্মসূচির মাধ্যমে কোভিড–১৯–এর দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করে এডিবি। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে মনমোহন প্রকাশ বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার জন্য শুধু ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে বিকল্প উৎস খোঁজা উচিত। কোরিয়া ও থাইল্যান্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা বানায়। এ ছাড়া স্পুতনিক–ভি ও সিনোভ্যাক্স নিয়েও আলোচনা এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ, এই মুহূর্তে মূল চ্যালেঞ্জ হলো টিকা সরবরাহ।
এদিকে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) সাড়ে ৫ থেকে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে মনে করে এডিবি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা কমিয়ে এনেছে সংস্থাটি। এর আগে প্রাথমিক প্রাক্কলনে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল এডিবি। আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস সম্পর্কে মনমোহন প্রকাশ বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম আট-নয় মাসের তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে এডিবি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস প্রাক্কলন করেছিল। উচ্চহারে প্রবাসী, রপ্তানি আয়সহ অন্যান্য সূচক অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিচ্ছিল। কিন্তু করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এপ্রিলের শুরুতে লকডাউন দেওয়া হয়। জনগণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়। এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। তা অবশ্যই প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে। এ কারণে আমাদের প্রাথমিক প্রাক্কলনের চেয়ে প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে আসতে পারে। তবে ৫ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো।’ এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। তা অবশ্যই প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে। এ কারণে আমাদের প্রাথমিক প্রাক্কলনের চেয়ে প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে আসতে পারে।
বাজেট ঘোষণার সময় চলতি ২০২০–২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ করা হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপটে এই লক্ষ্য আরও কমিয়ে ৬ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে আনার চিন্তা করছে সরকার। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরে ২ দশমিক ৬ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। সরকারের প্রাথমিক হিসাবে, গত ২০১৯–২০ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। তবে এখনো জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়নি। এডিবি মনে করে, চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি কত হবে, তা নির্ভর করে কীভাবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দেওয়া হচ্ছে তার ওপর। পাশাপাশি টিকা কার্যক্রম কেমন চলছে, এটিও অর্থনীতির সামনের দিকে যাওয়ার সূচক হিসেবে কাজ করবে। সংস্থাটি বলছে, সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে কোভিড–১৯–এর প্রথম ঢেউ সামাল দিয়েছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক নীতিগুলোও কার্যকর হয়েছে।

আরও পড়ুন:

বিষয়: