লা মেরিডিয়ানে বিনিয়োগ
নিউজ ডেস্ক
105
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী ২০২১
আলোচিত বেস্ট হোল্ডিং লিমিটেডের (বিএইচএল) নতুন প্রকল্প লা মেরিডিয়ান হোটেলে বিনিয়োগ করতে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে তড়িঘড়ি করে এক দিনেই অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই সুবাদে ব্যাংকগুলো লা মেরিডিয়ানে মোট ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংক ৫০০, জনতা ৫০০, অগ্রণী ৩৭৫ এবং রূপালী ব্যাংক ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে।
ঢাকার নিকুঞ্জে বর্তমানে বিএইচএলের যে লা মেরিডিয়ান হোটেল রয়েছে বিনিয়োগটি সেখানে নয়। ঢাকা ও ঢাকার আশপাশে লা মেরিডিয়ান নামে আরও হোটেল করার যে পরিকল্পনা রয়েছে, সেসব প্রস্তাবিত প্রকল্পেই রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করেছে। ওই অর্থ থেকে ১ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা নিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেনা পরিশোধ করেছে লা মেরিডিয়ান।
ব্যাংকগুলো কোন যুক্তিতে এ রকম বিনিয়োগ করল, সেই ব্যাখ্যা চেয়ে গত ২২ ডিসেম্বর তাদের চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এর জবাবে সোনালী ব্যাংক ২৮ ডিসেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানায়, ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ৭৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব করে বিএইচএল। একই বছরের ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ব্যাংকের পর্ষদ সভায় ৫৫ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ার ৬৫ টাকা দরে কিনে বিএইচএলে মোট ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এক সপ্তাহ পর ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকে আরেকটি চিঠি দেয় সোনালী ব্যাংক। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক বললে তারা এ বিনিয়োগ করবে। একই দিনে প্রস্তাবটি অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে অনুযায়ী সোনালী ব্যাংক চার দিন পর ১৫ ডিসেম্বর ৫০০ কোটি টাকা জমা দেয়।
সোনালী ব্যাংক বিনিয়োগটি সম্পন্ন হওয়ার তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানায় ২৬ ডিসেম্বর। বিএইচএল ছয় মাস পর ২০২০ সালের ৬ জুলাই সোনালী ব্যাংককে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার সার্টিফিকেটগুলো দেয়।
এদিকে অন্য তিন ব্যাংকের জবাবের ভাষাও সোনালী ব্যাংকের মতো প্রায় একই রকম। তাদের সবার নথিও বাংলাদেশ ব্যাংক দ্রুতগতিতে অনুমোদন করেছে।
এদিকে বিএইচএলকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি টাকা তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ। অনুমোদন ছাড়া এটি করা হচ্ছিল বলে বিজয় দিবসের ছুটির মধ্যে গত ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে ডিএসইকে নির্দেশ দেয়। এ নিয়ে গত ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
বর্তমানে শেয়ারবাজারে বেসরকারি কোম্পানির সরাসরি তালিকাভুক্ত হওয়া বন্ধ। তবে সরকারি কোম্পানি সরাসরি তালিকাভুক্ত হতে পারে। অথচ সরকারি না হওয়া সত্ত্বেও বিএইচএলকে সরাসরি তালিকাভুক্ত করার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিএসইসি চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন। বিএইচএল ওই চিঠিই কাজে লাগায়। তবে গত ১৭ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সেদিনই নিজের চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করেন অর্থমন্ত্রী।
জানা গেছে, বিদ্যমান সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী লা মেরিডিয়ান সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আসতে পারবে না। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ার ছেড়েই কেবল তা করা যাবে। কোম্পানিটি সেই প্রস্তুতিই এখন নিচ্ছে।
জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘বিএইচএলের তালিকাভুক্তির ব্যাপারে স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কিছু এলে বিএসইসি তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত দেবে।’
আরও পড়ুন:
বাজার প্রতিদিন সম্পর্কিত আরও
পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসইর কর্মশালা
২৯ এপ্রিল ২০২৪
লোকসান কাটাতে পারেনি মেট্রো স্পিনিং
২৯ এপ্রিল ২০২৪
ডিএসইর পর্ষদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বিএসইসি চেয়ারম্যান
২৭ এপ্রিল ২০২৪
সিমটেক্সের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
২৭ এপ্রিল ২০২৪
পুঁজিবাজার অস্থিতিশীলকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না: ডিবি প্রধান
২৭ এপ্রিল ২০২৪
নগদ লভ্যাংশ পাঠিয়েছে চার কোম্পানি
২৪ এপ্রিল ২০২৪