ঢাকা সোমবার
২৯ এপ্রিল ২০২৪
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ইয়াকিন পলিমার ‘নো’ ডিভিডেন্ড দিতে পারে!


নিউজ ডেস্ক
87

প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারী ২০১৯
ইয়াকিন পলিমার ‘নো’ ডিভিডেন্ড দিতে পারে!



মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান : পুঁজিবাজারের তালিকাভূক্ত কোম্পানি ইয়াকিন পলিমার লিমিটেডের শেয়ার দর ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে। প্রায় একটি ডিমের দামের সমান হয়ে গেছে কোম্পানিটির শেয়ার দর। ২০১৬ সালে তালিকাভূক্ত হওয়া কোম্পানিটি শুরু থেকেই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্টক ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে। কোন প্রকার ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়নি। আর এই স্টক ডিভিডেন্ডও প্রতি বছরেই কমতে শুরু করেছে। ২০১৬ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ২০১৭ সালে ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। আর ২০১৮ সালে দিয়েছে ৩ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড। কোম্পানির প্রোফাইল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে মাত্র তিন বছরের মাথায় কোম্পানিটির এ দূর্দশা কোনভাবেই মেনে নিতে পাচ্ছেন না সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাদের ধারণা ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারে। ইয়াকিন পলিমারের কোম্পানি সচিব মো. আকতারুজ্জামান বলেন, কোম্পানির ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল, টার্ন ওভার কমে গেছে। এছাড়াও ওভার হেড বেশি হয়েছে যে কারণে কোম্পানিটি ভালো অবস্থানে নেই। নতুন একটি ইউনিটি চালু করার কথা ছিল। টাকার অভাবে সেটিও চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। ইসলামি ব্যাংক থেকে একটি লোন পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে লোনটি এখনও পাওয়া যায়নি। লোনটি পেলে নতুন ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হবে। তবে লোনটি কবে নাগাদ পেতে পারে সেব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি কোম্পানি সচিব। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে আমরা যে ডিভিডেন্ডটা দিয়েছিলাম সেটি দেয়া ঠিক হয়নি। ডিভিডেন্ডটা না দিলে হয়তো কোম্পানির অবস্থা কিছুটা ভালো থাকতো। প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ইয়াকিন পলিমার লিমিটেড নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মাঝে বিরুপ মনোভাব বিরাজ করছে।  কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে আসার পূর্বে ভালো শেয়ার প্রতি আয় ( ইপিএস) দেখিয়ে বাজারে এসেছিল। অথচ বর্তমানে কোম্পানির ইপিএসের অবস্থাও ভালো না। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস লোকসানে ছিল। সূত্রমতে, এসময় কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে ০ দশমিক ০৫০ টাকা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কিছুটা উন্নতি হয়ে ইপিএস হয়েছে ০ দশমিক ০৫০ টাকা। আর তৃতীয় প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে ০ দশমিক ০৬০ টাকা। শেয়ারবাজারে আসার পূর্বে কোম্পানির অবস্থা ভালো থাকে। আর আসার পর খারাপ হয়ে যায়। তার বাস্তব উদাহরণ ইয়াকিন পলিমার লিমিটেড। তাইতো মো. আকতারুজ্জামান বার বার অন্যান্য কোম্পানির খারাপ অবস্থার কথা বলতে ছিলেন। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বেশিরভাগ কোম্পানির অবস্থা ভালো না। অন্যান্য কোম্পানি খারাপ করছে ইয়াকিন পলিমার খারাপ করলে দোষ কোথায়? তার বক্তব্যে এটিই প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। ভবিষ্যতে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে কোম্পানিটি যাবে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটির উত্তর দিলে প্রাইস সেনসিটিভ হয়ে যাবে। তাই এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া যাবে না। সূত্রমতে, কোম্পানিটির প্রফিটও যথেষ্ট পরিমানে কমে গেছে। ২০১৭ সালে কোম্পানিটির প্রফিট ছিল ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর ২০১৮ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৯৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির এই দূরাবস্থা কবে নাগাদ কাটতে পারে সেব্যাপারে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারেনি কোম্পানি সচিব। তিনি বলেন, এই দূরাবস্থা থেকে কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ম্যানেজমেন্ট। সূত্রমতে, মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর দুপুর ১ টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৮ টাকা। সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানির ক্লোজিং প্রাইজ ছিল ৭ টাকা ৯০ পয়সা। প্রায় এক বছর পূর্বে কোম্পানিটির শেয়ার দর ‍ছিল ১৩ টাকা ৪০ পয়সা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির শেয়ার দর ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে।শেয়ার দর আরও কমবে নাকি বাড়বে তা অবশ্য সময়েই বলে দেবে। যারা বুঝে-না বুঝে ইয়াকিন পলিমারে বিনিয়োগ করেছেন তারাও কোম্পানির ভালো খবরের প্রত্যাশায় দিনাতিপাত করছেন।

আরও পড়ুন: