বিকল্প পথে রাশিয়া যাচ্ছে আটকে পড়া গার্মেন্টপণ্য
নিউজ ডেস্ক
83
প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২২
রাশিয়ার ক্রেতাদের জন্য তৈরি গার্মেন্ট পণ্য অবশেষে চট্টগ্রাম থেকে রপ্তানি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৬৮ একক কনটেইনারভর্তি গার্মেন্টপণ্য জাহাজে করে চট্টগ্রাম থেকে কলম্বো বন্দর হয়ে রাশিয়ার পথে রয়েছে। আরো ১৮ একক পণ্য যেগুলোতে পাটের তৈরি পণ্য রয়েছে সেগুলো পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় ১৬৯ একক কনটেইনার রপ্তানি পণ্য কারখানা থেকে তৈরি হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের পাশে বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে পৌঁছে।
সেখান থেকে জাহাজে করে রাশিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ায় রাশিয়ামুখী জাহাজগুলো নতুন করে পণ্য বুকিং নেওয়া বন্ধ করে দেয়। এই অবস্থায় রপ্তানি পণ্যগুলো তৈরির পরও চট্টগ্রাম থেকে জাহাজে তোলা যায়নি। কিছুদিন আটকে থাকার পর এখন বিকল্প পথে সেগুলো পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কনটেইনার ডিপো পোর্ট লিংক লজিস্টিকস সেন্টার লিমিটেডের অ্যাসোসিয়েটস ডিরেক্টর দৌস মোহাম্মদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কিছুদিন ডিপোতে আটকে থাকার পর রাশিয়ান ক্রেতা নিজেরাই বিকল্প উদ্যোগে পণ্যগুলো পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে সেই পণ্য জাহাজে বোঝাই করে চট্টগ্রাম থেকে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দর হয়ে পোল্যান্ডের পথে আছে। পোল্যান্ড থেকে সড়কপথে সেগুলো রাশিয়ায় পৌঁছবে। ’ তিনি বলেন, ‘বাকি ১৮ একক রপ্তানি পণ্যও নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেগুলো তুরস্কের মারফি বন্দরে নিয়ে সেখান থেকে সড়কপথে রাশিয়ায় নেওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আমার ডিপোতে আটকে থাকা পণ্যের একটি সুরাহা হলো। ’
জানা গেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বড় শিপিং কম্পানিগুলো রাশিয়ামুখী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখায় নতুন করে কনটেইনার বুকিং বন্ধ রাখে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেডিটেরানিয়ান শিপিং কম্পানি, মায়ের্কস লাইন, হ্যাপাগ-লয়েড এবং ওয়ান লাইন গত ১ মার্চ থেকে রাশিয়ায় পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। অন্য শিপিং কম্পানিগুলোর মধ্যে যারা এখনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি তারাও পণ্য বুকিং নিচ্ছে না। আর সুইফটে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার কারণেও অনেক শিপিং কম্পানি এখন রাশিয়া-ইউক্রেনগামী পণ্য বুকিং নিতে আগ্রহী হচ্ছে না।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এমএসসির হেড অব অপারেশনস অ্যান্ড লজিস্টিকস আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো বুকিং নিচ্ছি না। আর রপ্তানিকারকরাও আমাদের বুকিং দিতে আসছে না। কারণ পেমেন্ট জটিলতা না কাটলে বুকিং আসবে কোত্থেকে। ’
এরই মধ্যে আগে বুকিং থাকা কনটেইনারগুলো একটি নির্দিষ্ট বন্দরে জমার রাখার উদ্যোগ নেয় বেশ কয়েকটি শিপিং লাইন। সেখান থেকে বিকল্প পথে সেগুলো পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে বিদেশি ক্রেতারা নিজে, কিন্তু যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই ১৬৯ একক রপ্তানি কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরের আশপাশে থাকা বিভিন্ন বেসরকারি ডিপোতে নেওয়া হয়। যুদ্ধের কারণে আর সেগুলো জাহাজে তোলা যায়নি। এখন পর্যন্ত কনটেইনার ডিপো এছাক ব্রাদার্সে ৩৬ একক কনটেইনার আটকে আছে; যেগুলো মার্চের শুরুর দিকেই রাশিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল। এ রকম আরো আটটি ডিপোতে বাকি কনটেইনারগুলো পড়ে আছে।