ঢাকা বৃহস্পতিবার
০২ মে ২০২৪
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বিসিক শিল্পনগরীতে বন্ধ ৫৯৪ কারখানা


নিউজ ডেস্ক
69

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
বিসিক শিল্পনগরীতে বন্ধ ৫৯৪ কারখানা



সারা দেশে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগরগুলোতে ৫৯৪টি শিল্প-কারখানা বন্ধ রয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলোর বেশির ভাগই ক্ষতির মুখে পড়ে বন্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। বিসিকের নীতিমালা অনুযায়ী কারখানা চালাতে না পারলে স্বেচ্ছায় বিক্রি করে দিতে হয়, তা না হলে প্লট বাতিল করে নতুন উদ্যোক্তাদের বরাদ্দ দিয়ে দিতে পারবে বিসিক। তবে কারখানাগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও বিসিক কর্তৃপক্ষ তা বাতিল করছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও বিসিক বলছে, প্লট নিয়ে যাঁরা দীর্ঘদিনেও কাজ শুরু না করে ফেলে রেখেছেন এবং যেসব কারখানা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে, সেসব প্লট বাতিল করছে সংস্থাটি। কর্মকর্তারা বলছেন, সুনির্দিষ্ট শিল্প-কারখানা করার প্রকল্প প্রস্তাবের ভিত্তিতেই প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অনেক উদ্যোক্তা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কারখানা করেন না, প্লট ফেলে রাখেন। এখন প্রকল্প প্রস্তাব পাওয়ার পর সম্ভাব্যতা যাচাই করে উদ্যোক্তাদের প্লট দেওয়া হচ্ছে। প্লট নিয়ে প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে যদি কেউ কারখানা না করেন, তাহলে তাঁদের প্লট বাতিল করা হচ্ছে। একই সঙ্গে যাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে কারখানা বন্ধ রেখেছেন, তাঁদের প্লটও বাতিল করা হচ্ছে। বিসিক শিল্পনগরীর প্লট ও শিল্প ইউনিট সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, বর্তমানে বিসিকের ৭৯টি শিল্পনগরে মোট শিল্প প্লট সংখ্যা ১১ হাজার ৬৩৬। এর মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার ৬৪৮টি। এসব বরাদ্দ করা প্লটে শিল্প-কারখানা থাকার কথা পাঁচ হাজার ৯৯৮টি। তবে বর্তমানে উৎপাদনরত আছে চার হাজার ৭৬৯টি কারখানা। বাস্তবায়নাধীন আছে ৬৩৫টি। আর রুগ্ণ বা বন্ধ আছে ৫৯৪টি শিল্প-কারখানা। বেশির ভাগ শিল্প ইউনিট একাধিক প্লট ব্যবহার করছে। সে কারণেই বরাদ্দ করা প্লট আর গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানার সংখ্যায় তারতম্য দেখা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিকের শিল্পনগরী ও সমন্বয় শাখার উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী নাসরীন রহিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিসিকের নীতিমালা অনুযায়ী যারা প্লট বরাদ্দ নিয়েও কাজ শুরু করে না, জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটির মাধ্যমে সেগুলো বাতিল করা হয়। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলোর উদ্যোক্তারা অনেক সময় বিসিকের অনুমতি নিয়ে নতুন উদ্যোক্তার কাছে হস্তান্তর করে দেয়। তবে যারা হস্তান্তর না করে দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ রাখে, আমরা তাদের প্লট বাতিল করে দিই। আমরা বাতিল করার আগে স্থানীয় কার্যালয়ের মাধ্যমে তাদের বারবার চিঠি দিয়ে সতর্ক করি। তার পরও কাজ না হলে জেলা বরাদ্দ কমিটি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। ’ খালি প্লটগুলো কিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়—এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্লট খালি হলেই বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। প্লট নিতে সংশ্লিষ্ট জেলার বিসিক বরাবর বা সরাসরি বিসিকের চেয়ারম্যান বরাবরও আবেদন করতে পারে। পরবর্তী সময়ে জেলা কার্যালয় আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটির মাধ্যমে বরাদ্দ দিয়ে থাকে। ’ বিসিকের পরিচালক (শিল্প উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ‘যারা প্লট বরাদ্দ নিয়েও দীর্ঘ সময়ে কাজ শুরু করেনি, তাদের প্লট বাতিল করছে জেলা কমিটিগুলো। যারা কারখানা বন্ধ রেখেছে, তাদের প্লটও বাতিল করা হচ্ছে। ’ বিসিকের তথ্য মতে, সারা দেশের মধ্যে হালকা প্রকৌশল মুন্সীগঞ্জ শিল্পনগরীতে সবচেয়ে বেশি প্লট খালি পড়ে আছে। এখানে ৩৬২টি প্লটের মধ্যে সব কটিই খালি আছে। এরপর গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণে শিল্পনগরে খালি আছে ১৩১টি প্লট। শ্রীমঙ্গল শিল্পনগরীতে খালি আছে ১২১টি প্লট। বরিশাল শিল্পনগরীতে খালি আছে ৯২টি প্লট। চুয়াডাঙ্গা শিল্পনগরীতে খালি আছে ৭৮টি, মাদারীপুর সম্প্রসারণ শিল্পনগরীতে ৩৮টি, বরগুনা শিল্পনগরীতে ৪০টি, ঝালকাঠি শিল্পনগরীতে ৩৯টি, খাগড়াছড়ি শিল্পনগরীতে ৩৩টি, সুনামগঞ্জ শিল্পনগরীতে ১০টি, লালমনিরহাট শিল্পনগরীতে ৯টি, মেহেরপুর শিল্পনগরীতে ছয়টি, ভোলা শিল্পনগরীতে ছয়টি, পটুয়াখালী শিল্পনগরীতে চারটি, রাঙামাটি শিল্পনগরীতে পাঁচটি এবং কক্সবাজার শিল্পনগরীতে খালি আছে তিনটি প্লট।

আরও পড়ুন:

বিষয়: