ঢাকা রবিবার
০৫ মে ২০২৪
২৭ এপ্রিল ২০২৪

করোনায় চাকরি হারিয়ে এখনো বেকার ৭.৭%


নিউজ ডেস্ক
184

প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২১
করোনায় চাকরি হারিয়ে এখনো বেকার ৭.৭%



চাকরি হারানো, বেতন না পাওয়া, কমা কিংবা পরিবারের খরচ জোগাতে না পারায় করোনাকালে ৪৯ শতাংশ মানুষ গ্রামে ফিরে গেছে। যদিও একটা সময় তাদের প্রায় সবাই ঢাকায় ফিরেছে।গতকাল বুধবার সানেমের কর্মসংস্থান ও অভিবাসনের ওপর মহামারির প্রভাবের জরিপের ফলাফল ওয়েবিনারে তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়েমা হক বিদিশা। কর্মসংস্থান ও অভিবাসনের ওপর করোনা মহামারির প্রভাব সম্পর্কে ধারণা পেতে সানেম ২০২১ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে খানা পর্যায়ে জরিপটি পরিচালনা করেছে। জরিপে ২৭৩ জন প্রবাসী শ্রমিক, ২৩০ জন দেশের মধ্যে অন্যত্র কাজের জন্য স্থানান্তরিত শ্রমিক এবং দেশ বা দেশের বাইরে কাজের জন্য স্থানান্তরিত নন, এমন দুই হাজার ৮৪৫ জন কর্মী বা শ্রমিকের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। ওয়েবিনারটি পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পওতিয়ানেন। ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে কথা বলেছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার ড. তাসনিম সিদ্দিকী এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ওয়েবিনারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৭০ জন ব্যক্তি অংশ নেন। গত বছরের মার্চ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত মজুরিভিত্তিক শ্রমিকের ওপর করোনার প্রভাব নিয়ে এই জরিপ করা হয়। জরিপে উঠে আসে করোনার প্রকোপে চাকরি হারানোর বা বেতন কমার তথ্য। সানেম ২৩০ জন শ্রমিকের ওপর জরিপ করে, যাঁরা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকায় কাজের জন্য এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে গত বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছিলেন, বাকিরা বেতন না পাওয়ার জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। ওয়েবিনারে উঠে আসে, করোনার ১০ মাসে বেতন কমেছিল ৬১ শতাংশ মানুষের। এর পাশাপাশি পেশা পরিবর্তন করেছেন ৩.৭ শতাংশ, সাময়িক চাকরি হারিয়েছেন ১.৫ শতাংশ এবং এখনো পর্যন্ত চাকরিহারা ৭.৭ শতাংশ। অর্থাৎ যাঁরা চাকরি হারিয়েছিলেন, তাঁদের অর্ধেকের বেশি এখনো চাকরি পাননি। ৩১.১ শতাংশ মজুরিভিত্তিক শ্রমিক ও ৪১.৮ শতাংশ আত্মকর্মসংস্থানে জড়িত শ্রমিক এখনো ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেননি। অন্যদিকে ৫ শতাংশ অভিবাসী কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন, যাঁদের মধ্যে ২০ শতাংশ চাকরি হারিয়েছেন। ২৭৩ জন অভিবাসী কর্মীর ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়। ফেরত আসা অভিবাসী কর্মীর মধ্যে বেশি এসেছেন মালয়েশিয়া ও কুয়েত থেকে। এরপর সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও ওমান থেকে। ড. বিদিশা বলেন, যেসব খাতের কর্মজীবীরা এখনো অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ধারায় পিছিয়ে আছেন, তাঁদের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ফিরে আসা প্রবাসীদের আবার সে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশের শ্রমিক, অভিবাসী ও অন্যান্য খাতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের ওপর করোনার কী ধরনের প্রভাব পড়েছে, তা আলাদা করে বিশ্লেষণ করা দরকার। একই ধরনের বিশ্লেষণ ভিন্ন আয়ের মানুষগুলোর ওপর করা জরুরি। সঠিক নীতি প্রণয়ন করা জরুরি। ড. রায়হান রেমিট্যান্সের প্রবাহ নিয়ে তাঁর আলোচনায় কিছু সুনির্দিষ্ট আঙ্গিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘রেমিট্যান্স আগামী দিনেও অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমাদের জরিপে দেখা গেছে, রেমিট্যান্সগ্রহীতা পরিবারগুলোর ওপরও কভিডের প্রভাব পড়েছে।’ রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রধান ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, করোনার পর অন্তত চার হাজার অভিবাসী ফেরত এসেছেন। ফেরত আসা অভিবাসী কর্মীর গড়ে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আরও পড়ুন:

বিষয়: