রপ্তানি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে
নিউজ ডেস্ক
235
প্রকাশিত: ০৪ মার্চ ২০২১
বিশ্বের অনেক দেশেই করোনা নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। টিকাও দেওয়া হচ্ছে। তবে দেশের পণ্য রপ্তানি ঋণাত্মক প্রবণতা থেকে বেরোতে পারেনি। তিন মাস ধরে রপ্তানি আয় নিম্নমুখী ধারায় আছে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৩১৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এই আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ কম। জানুয়ারিতে ৩৪৪ কোটি ডলার রপ্তানি হয়েছিল। তখন রপ্তানি কমেছিল ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। তার আগের মাসে ৩৩০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হলেও তা ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে ৬ দশমিক ১১ শতাংশ কম।
সব মিলিয়ে চলতি ২০২০–২১ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই–ফেব্রুয়ারি) ২ হাজার ৫৮৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম। একই সঙ্গে তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ কম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল বুধবার পণ্য রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
করোনার মধ্যেও নিট পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়ার জুতা, হোম টেক্সটাইল, রাসায়নিক ও প্রকৌশল পণ্য, ওষুধ, হস্তশিল্প, বাইসাইকেলসহ কয়েকটি পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
তবে ওভেন পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত মাছ, চামড়াবিহীন জুতা, সিরামিক পণ্য, আসবাব ইত্যাদি পণ্যের রপ্তানি কমে গেছে।
মোট পণ্য রপ্তানি আয়ের ৮১ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। রপ্তানিতে নিট পোশাক ভালো করলেও ওভেনের দুর্দশা কাটছে না। ফলে সামগ্রিকভাবে পোশাক রপ্তানি কমে গেছে পৌনে ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের আট মাসে ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। তার মধ্যে ১ হাজার ১৩৪ কোটি ডলারের নিট ও ৯৬৯ কোটি ডলারের ওভেন পোশাক রয়েছে।
সামগ্রিকভাবে পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলেও তা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করেন নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক। তিনি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ভালোই করছি। পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যেতে থাকায় বিদেশি ক্রেতারা নড়াচড়া শুরু করেছে। তুলনামূলকভাবে কম হলেও ক্রয়াদেশ আসছে। অবস্থার আর অবনতি না হলে জুনের দিকে রপ্তানি স্বাভাবিক হবে।’
মহামারিতে অন্য খাত যেখানে কমবেশি হাবুডুবু খাচ্ছিল, সেখানে পাট ও পাটজাত পণ্যের বেশ ভালো করেছে। সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। যদিও ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচা পাটের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের দাম বেড়েছে। তাই রপ্তানি আয়ও বেড়েছে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ৮৬ কোটি ২৭ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। আলোচ্য সময়ে পাটের সুতা ও বস্তার রপ্তানি যথাক্রমে ৩৭ ও ২৮ শতাংশ বেড়েছে। তবে কাঁচা পাটের রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ৭৩ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল, ৬৬ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, ৩৩ কোটি ৮০ লাখ ডলারের হিমায়িত খাদ্য, ৩৪ কোটি ডলারের প্রকৌশল পণ্য, ২১ কোটি ডলারের চামড়াবিহীন জুতা, ৭ কোটি ডলারের প্লাস্টিক পণ্য, ২ কোটি ২৩ লাখ ডলারের হস্তশিল্প রপ্তানি হয়েছে।
জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাত নিয়ে রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তারা যতটা আশঙ্কা করেছিলেন, বাস্তবে ততটা হয়নি। পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। টিকা চলে আসায় মানুষের চলাফেরা বেড়েছে। পণ্য বিক্রিও বাড়ছে। পণ্য রপ্তানির চেহারাও ভালো হচ্ছে। তবে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ছোট উদ্যোক্তারা সক্ষমতায় পিছিয়ে রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
অথনীতি সম্পর্কিত আরও
বৈশ্বিক ঋণ এখন রেকর্ড ৩১৩ ট্রিলিয়ন ডলারে
০৪ মে ২০২৪
এপ্রিলে রপ্তানি আয় ৩৯২ কোটি ডলার
০২ মে ২০২৪
ফরিদপুরে ২০০ কোটি টাকার ভুট্টা উৎপাদন
০১ মে ২০২৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এনআরবি সিআইপি এসোসিয়েশনের বৈঠক
২৯ এপ্রিল ২০২৪
২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৬৮ কোটি ডলার
২৮ এপ্রিল ২০২৪
নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বিআইসিএমে সেমিনার অনুষ্ঠিত
২৭ এপ্রিল ২০২৪