ব্যাংকাস্যুরেন্স হতে পারে এ সময়ের সেরা আর্থিক পণ্য
নিউজ ডেস্ক
165
প্রকাশিত: ০১ মার্চ ২০২১
মাত্র একটি বিমা পণ্যই পুরো বিমা খাতকে উজ্জীবিত করে দিতে পারে। পণ্যটির নাম ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’। বিমা পণ্য, কিন্তু তা বিক্রি হবে ব্যাংকের শাখাগুলোর মাধ্যমে। বিমা খাতের প্রতি আস্থা-অনাস্থার দোলাচলে থাকা মানুষের জন্য অন্যতম ভরসার পণ্যও হতে পারে এটি। এ জন্য গ্রাহকদের বিমা কোম্পানিতে যেতে হবে না, ব্যাংকের শাখায় গেলেই চলবে। অর্থাৎ ব্যাংক তার নিজের গ্রাহকের কাছে ব্যাংক পণ্য তো বিক্রি করবেই, বিমা পণ্যও বিক্রি করবে।
আশার কথা যে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ব্যাংকাস্যুরেন্স-সংক্রান্ত খসড়া একটি নীতিমালা তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছে এক মাস আগেই। বাকিটা নির্ভর করবে এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে ভেতরে-ভেতরে দ্বন্দ্ব কাজ করে অনেক। এক সংস্থা আরেক সংস্থাকে গুরুত্ব দিতে চায় না। এ ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় দায়িত্ব নিলে কাজটি এগোতে পারে বলে মনে করছেন বিমা খাতের বিশেষজ্ঞরা।
ব্যাংকের মাধ্যমে বিমা পণ্য বিক্রির যে পদ্ধতি, সেটাই ব্যাংকাস্যুরেন্স। এটি ফরাসি শব্দ। ১৯৮০ সালের দিকে ফ্রান্স ও স্পেনে প্রথম এটি চালু হয়। ইউরোপের বেশির ভাগ দেশে ব্যাংকের মাধ্যমে জীবনবিমা পলিসি বিক্রি হয়। এশিয়ার দেশগুলোতেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এটি। নিকট প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাও এতে সফল হয়েছে। অথচ ৬০টি ব্যাংক ও ৭৭টি বিমা কোম্পানি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে।
আইডিআরএর চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন এ বিষয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বলেন, ব্যাংকাস্যুরেন্স একসঙ্গে ব্যাংক ও বিমা—উভয় খাতের জন্যই শুভবার্তা বয়ে আনবে। আর গ্রাহকদের উপকার পাওয়ার দিকটি তো আছেই।
যেহেতু বিমার তুলনায় ব্যাংকের ওপর গ্রাহকদের আস্থা বেশি, সেহেতু ব্যাংকাস্যুরেন্সের আওতায় বিমা পলিসি কেনার প্রতি গ্রাহকদের আগ্রহ বাড়বে। ব্যাংকাস্যুরেন্স চালু হলে বিমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম সংগ্রহের খরচ কমবে। আবার বাড়তি খরচ ছাড়াই বিমা পণ্য বিক্রি করতে পারবে ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যাংকের মোট শাখা এখন ১০ হাজারের বেশি। আর বিশ্বব্যাংকের ২০১৮ সালের এক হিসাব বলছে, দেশে ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা ৯ কোটির মতো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) শিক্ষক মোহাম্মদ জেড মামুন ব্যাংকাস্যুরেন্সের ওপর একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন কয়েক বছর আগে। প্রবন্ধের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, স্পেন, নেদারল্যান্ডসের মতো দেশের ব্যাংকগুলো নিজস্ব পণ্যের পাশাপাশি বিমা পণ্যও বিক্রি করে। বাংলাদেশেও এর বিশাল সম্ভাবনা আছে। ব্যাংকের যেহেতু বড় একটা গ্রাহক শ্রেণি রয়েছে, সেহেতু নিজেদের গ্রাহকদের মধ্যেই তারা বিমা পণ্য বিক্রি করতে পারে। করপোরেট গ্রাহক এবং কোম্পানির বেতন হয় যেসব ব্যাংকের মাধ্যমে, শুরুর দিকে সেসব ব্যাংকই পারে বিমা পণ্য বিক্রিতে এগিয়ে আসতে।
আইডিআরএ যে ব্যাংকাস্যুরেন্সের খসড়া করেছে, তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোই ব্যাংকাস্যুরেন্সের এজেন্ট হতে পারবে। সে জন্য তাদের বিমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। তবে কোনো ব্যাংকাস্যুরেন্স এজেন্ট তিনটির বেশি বিমা কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না। এ জন্য বিমা কোম্পানিকে আইডিআরএ এবং ব্যাংকাস্যুরেন্স এজেন্টকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।
ফাউন্ডেশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব লাইফ অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ডের (এফএএলআইএ) ২০১৬ সালের এক জরিপে বিভিন্ন দেশের ব্যাংকাস্যুরেন্স বাজারের চিত্র উঠে আসে। বলা হয়, ১৩টি দেশের মধ্যে ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ৭৯ শতাংশ পলিসি বিক্রি হয় তুরস্কে; ভারতে এই হার ২০ দশমিক ৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
অথনীতি সম্পর্কিত আরও
বৈশ্বিক ঋণ এখন রেকর্ড ৩১৩ ট্রিলিয়ন ডলারে
০৪ মে ২০২৪
এপ্রিলে রপ্তানি আয় ৩৯২ কোটি ডলার
০২ মে ২০২৪
ফরিদপুরে ২০০ কোটি টাকার ভুট্টা উৎপাদন
০১ মে ২০২৪
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এনআরবি সিআইপি এসোসিয়েশনের বৈঠক
২৯ এপ্রিল ২০২৪
২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৬৮ কোটি ডলার
২৮ এপ্রিল ২০২৪
নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বিআইসিএমে সেমিনার অনুষ্ঠিত
২৭ এপ্রিল ২০২৪