মাত্র ৪৫০ টাকায় ঘরে বসে বিও হিসাব খোলার সুযোগ
নিউজ ডেস্ক
96
প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারী ২০২১
দেশের শেয়ারবাজার এখন চাঙা। দৈনিক গড় লেনদেন ছাড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। বাজারে বিনিয়োগকারী টানতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ জন্য দেশে–বিদেশি ব্রোকারেজ হাউসের শাখা খোলার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এমনকি দেশের ভেতর ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্রোকারেজ হাউসের ডিজিটাল বুথ খোলার নীতিমালাও করা হয়েছে। এখন নতুন করে আসছে অনলাইনে বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব খোলার সুবিধা। আগামী মাস থেকেই নতুন এ ব্যবস্থা চালু হতে পারে। সে লক্ষ্যেই অনলাইনে বিও হিসাব খোলার সব প্রস্তুতি এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
শেয়ারবাজারে শেয়ার ও বিও হিসাব সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) অনলাইনে বিও হিসাব খোলার নতুন ব্যবস্থাটি তৈরি করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনায় মূল্য সংযোজন সেবা বা ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস হিসেবে সিডিবিএল এ ব্যবস্থা তৈরি করেছে। এরই মধ্যে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি চালু করা হবে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের মধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে বিও হিসাব খোলার ব্যবস্থাটি চালু হতে পারে। আর আগামী মাসে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী কোনো বাংলাদেশির বিও হিসাব খোলার মাধ্যমে নতুন করে বিও হিসাব চালুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অনলাইনে বিও হিসাব খোলার সুবিধা চালু হলে তাতে দেশ–বিদেশের বিনিয়োগকারীরা সহজে শেয়ারবাজারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন। কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও হোক, অথবা সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগ—শেয়ারবাজারে শেয়ার কিনতে হলে বিও হিসাব লাগবেই। সেই বিও হিসাব খোলাকে সহজ করতেই এবার অনলাইন ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে।
বর্তমানে একেক ব্রোকারেজ হাউস বিও হিসাব খোলার ক্ষেত্রে একেক রকম ফি বা মাশুল নেয়। ব্রোকারেজ হাউসভেদে এ মাশুল ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। তবে অনলাইনে বিও হিসাব খোলার ক্ষেত্রে এ ফি হবে সর্বজনীন। মাত্র ৪৫০ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৪৫০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসে তাঁদের পছন্দের ব্রোকারেজ হাউসে বিও হিসাব খোলার সুযোগ পাবেন।
জানতে চাইলে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী মাসে দুবাইয়ে শেয়ারবাজার নিয়ে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে একটি ব্রোকারেজ হাউসের ডিজিটাল বুথও উদ্বোধন করা হবে। আমরা চেষ্টা করছি ওই সময় অনলাইনে একজন প্রবাসী বাংলাদেশির বিও হিসাব খোলার মাধ্যমে এ ব্যবস্থা চালু করতে। দেশি–বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে ইংরেজি ও বাংলা—দুই ভাষায় ব্যবহার করা হয়েছে নতুন ব্যবস্থায়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যাতে সহজেই অনলাইনে বিও হিসাব খুলতে পারেন, তার জন্য পুরো ব্যবস্থাটির একটি অডিও–ভিডিও টিউটরিয়ালও তৈরি করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে একেক ব্রোকারেজ হাউস বিও হিসাব খোলার ক্ষেত্রে একেক রকম ফি বা মাশুল নেয়। ব্রোকারেজ হাউসভেদে এ মাশুল ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। তবে অনলাইনে বিও হিসাব খোলার ক্ষেত্রে এ ফি হবে সর্বজনীন। মাত্র ৪৫০ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৪৫০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসে তাঁদের পছন্দের ব্রোকারেজ হাউসে বিও হিসাব খোলার সুযোগ পাবেন।
যেভাবে অনলাইনে বিও হিসাব খোলা যাবে
সিডিবিএলের পক্ষে নতুন এ ব্যবস্থা তৈরির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বিভাগের প্রধান রাকিবুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, বর্তমানে বিও হিসাব খুলতে যেসব কাগজপত্র লাগে, তার সবই লাগবে অনলাইনের ক্ষেত্রেও। বিও হিসাব খোলার জন্য যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি জমা করা যাবে আর্থিক লেনদেনের যেকোনো গেটওয়ে ব্যবহার করে।
একজন বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের মোবাইল নম্বর ও ই–মেইল দিয়ে বিও হিসাব খোলার প্রথম ধাপে লগ–ইন করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে ওই বিনিয়োগকারীর মোবাইল ও ই–মেইলে একটি গোপন পাসওয়ার্ড চলে যাবে। সেটি একবারই ব্যবহার করা যাবে, এ কারণে সেটি ওটিপি বা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত। ওই পাসওয়ার্ড দিয়ে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে ওই একজন বিনিয়োগকারীকে। কয়েকটি ধাপে বিনিয়োগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক হিসাব নাম্বার, ব্যাংক চেকের কপি, বিনিয়োগকারীর ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে।
এমনকি বিনিয়োগকারীকে বেছে নিতে হবে তাঁর পছন্দের ব্রোকারেজ হাউস। এরপর ওই আবেদন চলে যাবে বিনিয়োগকারীর পছন্দের ব্রোকারেজ হাউসে। ব্রোকারেজ হাউসের পক্ষ থেকে যাচাই–বাছাইয়ের পর সব ঠিকঠাক থাকলে সেই আবেদন গ্রহণ করা হবে। তখন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে একটি নোটিফিকেশন চলে যাবে বিনিয়োগকারীর মোবাইল ও ই–মেইলে। সেই নোটিফিকেশন পাওয়ার পর বিনিয়োগকারীকে বিও ফি জমা দিতে হবে। বিও ফি জমা হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস সিডিবিএলের সিস্টেমে তা আপলোড করে দেবে। আর বিনিয়োগকারী মোবাইল ও ই–মেইলে পেয়ে যাবেন ‘সাকসেসফুল’ বার্তা।
রাকিবুল ইসলাম চৌধুরী জানান, শুধু দেশের বিনিয়োগকারী নন, বিদেশে বসেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনলাইনে বিও হিসাব খুলতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে পাসপোর্টের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে। অনলাইনের এ সুবিধা চালু হলে বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসে বিও হিসাব খোলার সুযোগ যেমন পাবেন, তেমনি তাঁর সময় ও খরচ বাঁচবে।
বর্তমানে শেয়ারবাজারে বিও হিসাব রয়েছে প্রায় পৌনে ২৬ লাখ। যেগুলোর মধ্যে সোয়া ৭ লাখ বিও হিসাবে কোনো শেয়ার নেই। সাধারণত এসব বিও হিসাবের বড় অংশ শুধু আইপিও আবেদনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নতুন নিয়ম করেছে, আইপিও আবেদন করতে হলে সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। আগামী এপ্রিল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে কিছু বিও হিসাব কমে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে অনলাইনে ঘরে বসে বিও হিসাব খোলার সুবিধা চালু হলে এবং বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলে তাতে নতুন করে কিছু বিও হিসাবের সংখ্যা বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:
প্রথম সংবাদ সম্পর্কিত আরও
৬৭৯ কোটি টাকার শেয়ার ইস্যু করবে রূপালী ব্যাংক
০১ মে ২০২৪
লোকসানে গোল্ডেন হারভেস্ট
২৯ এপ্রিল ২০২৪
প্রযুক্তি খাতে করছাড়ের মেয়াদ না বাড়ানোর পরামর্শ আইএমএফের
২৮ এপ্রিল ২০২৪
আবারও কমলো সোনার দাম
২৭ এপ্রিল ২০২৪
এক দিনের ব্যবধানে আবারও কমলো স্বর্ণের দাম
২৫ এপ্রিল ২০২৪
পুঁজিবাজারে শরীয়াহ ভিত্তিক প্রোডাক্ট আনলে বিনিয়োগ বাড়বে: শেখ শামসুদ্দিন
২৩ এপ্রিল ২০২৪