ঢাকা বৃহস্পতিবার
০২ মে ২০২৪
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ডিএসই’র এমডি নিয়োগে বাকবিতণ্ডা


নিউজ ডেস্ক
74

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী ২০২০
ডিএসই’র এমডি নিয়োগে বাকবিতণ্ডা



স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ সভায় কাজী সানাউল হককে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে তুমুল বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়েছে। পর্ষদের একটি অংশ সানাউলকে এমডি করার বিরোধিতা করলেও ডিএসই’র চেয়ারম্যান আবুল হাসেম বিষয়টি আমলেই নেননি। উল্টো সানাউলের পক্ষে তিনি বিরোধীতাকারীদের মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ডিএসই’র পর্ষদ সভায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, কাজী সানাউল হককে এমডি করার বিষয়ে পর্ষদ সভায় ডিএসই’র চেয়ারম্যান আবুল হাসেম জানান, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ডিএসইর এমডি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যদি কারও মনে হয় যে, এমডি নিয়োগে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি তাহলে তিনি মামলা করতে পারেন। জানা গেছে, ডিএসই পর্ষদের একটি অংশের পাশাপাশি আরও ২০-২৫ জন সদস্য কাজী সানাউল হককে এমডি করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিষয়টি আমলেই নেননি চেয়ারম্যান। উল্টো তিনি সানাউলের পক্ষে মত পোষন করেছেন। ডিএসইর পর্ষদ সভার একাধিক সদস্য জানান, বৈঠকে পরিচালকদের একটি অংশের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, কাজী সানাউল হককে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এর জবাবে চেয়ারম্যান জানান- এর আগে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কে এ এম মাজেদুর রহমানকে এমডি করার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন বিএসইসি নাকচ করে দিয়েছে। এখন সানাউল হকের প্রস্তাব বিএসইসি অনুমোদন দিয়েছেন। আপনাদের যদি মনে হয়, এমডি নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করা হয়নি, তাহলে মামলা করেন। বৈঠক শেষে ডিএসই’র একজন পরিচালক গণমাধ্যমকে বলেন, ডিএসইর এমডি নিয়োগ নিয়ে যা হয়েছে তা শেয়ারবাজারের জন্য মোটেও ভালো হয়নি। ডিএসইর জন্য এটি খুবই খারাপ উদাহরণ হয়ে থাকবে। এর জন্য হয়তো পুরো শেয়ারবাজারকেই ভুগতে হতে পারে। তিনি আরো বলেন, ডিএসইতে বর্তমানে যেসব স্বতন্ত্র পরিচালক আছেন, তাদের মেয়াদ বেশি দিন নেই। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই তাদের মেয়াদ শেষ হবে। মেয়াদের শেষ পর্যায়ে তারা শেয়ারবাজারের জন্য ক্ষতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দিয়ে গেলেন। তাছাড়া বাজার এখন একটি ক্রিটিক্যাল অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে একজন স্বচ্ছ ব্যক্তিকে ডিএসইর এমডি করা উচিত ছিল। এদিকে পর্ষদ সভা শেষে ডিএসই’র কার্যলয়ে সাংবাদিকরা ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাসেম’র সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে, ব্যস্ততা দেখিয়ে পাশকাটিয়ে তিনি চলে যান। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ডিএসই’র এমডি নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটিতে ‘নমিনেশন অ্যান্ড রিমিউনারেশন কমিটি (এনআরসি)’ কাজী সানাউল হককে এমডি হিসেবে প্রাথমিকভাবে বেছে নেয়। এরপর ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসইর পর্ষদ সভায় তাকে এমডি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পর্ষদ সভায় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের ৬ জন কাজী সানাউল হককে এমডি হিসাবে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে সম্মতি জানান। তবে তিনজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালকসহ ৪ জন পরিচালক তার বিষয়ে আপত্তি জানান। আপত্তি জানানো শেয়ারহোল্ডারদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, এমডি নিয়োগে স্বচ্ছ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। তারা অভিযোগ করেন, ডিএসইর এমডি নিয়োগের বিষয়ে পর্ষদ সদস্যদের নোটিশ করতে হয়। কিন্তু এবার কোন নোটিশ করা হয়নি। আবার এমডিকে পর্ষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করানোর রীতি থাকলেও তা করা হয়নি। এছড়া আইসিবিতে থাকা অবস্থায় কাজী সানাউল হক’র বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ উঠে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে তাকে তলবও করা হয়। এ নিয়ে সাংবাদ মাধ্যমে লেখা লেখি হয়েছে। এমন বিতর্কিত ব্যক্তিকে ডিএসই’র এমডি করা উচিত হবে না। তবে এরপরও পর্ষদ সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ওইদিনেই ডিএসই থেকে কাজী সানাউল হককে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য বিএসইসিতে আবেদন করা হয়। এরপর ১২ জানুয়ারি ডিএসই থেকে সানাউল হক এর বিষয়ে পর্ষদ সদস্যদের আপত্তিগুলো চিঠি দিয়ে বিএসইসিকে জানানো হয়। চিঠিতে, আপত্তিগুলো বিবেচনায় নিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে এমডি নিয়োগের প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য বিএসইসিকে অনুরোধ করা হয়েছে। এরপর গত বুধবার কমিশন সভা করে বিএসইসি কাজী সানাউল হককে ডিএসইর এমডি হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।

আরও পড়ুন:

বিষয়: