ঢাকা শনিবার
২৭ এপ্রিল ২০২৪
১২ সেপ্টেম্বর ২০২১

বেনাপোল স্থলবন্দরে ১১ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা


নিউজ ডেস্ক
92

প্রকাশিত: ২৫ মে ২০১৯
বেনাপোল স্থলবন্দরে ১১ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা



স্টাফ রিপোর্টার : রাজস্ব ফাঁকি রোধে ব্যাপক কড়াকড়ি ও নিত্যনতুন নিয়ম চালু করায় চলতি অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টম হাউজে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধস নেমেছে। আমদানি বাণিজ্য কমে গিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেনাপোল স্থলবন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা চার হাজার ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছিল চার হাজার ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এতে ঘাটতি ছিল ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। গত ২১ মে পর্যন্ত ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি রয়েছে এক হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ পথে বাণিজ্যে অনীহা প্রকাশ করায় সরকারের যেমন রাজস্ব আয় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনই লোকসান গুনছেন ব্যবসায়ীরাও। ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা নিশ্চিত হলে আবার বাণিজ্যে গতি ফিরবে বন্দরে। আর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, শুল্ক ফাঁকি রোধে কড়াকড়ি আরোপ করায় আমদানি কমে রাজস্ব ঘাটতি বেড়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা বাড়াতে আন্তরিকভাবে কাজ করছে কাস্টমস। আমদানিকারক ইদ্রিস আলী জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বর্তমানে অতীতের তুলনায় এত বেশি কড়াকড়ি আরোপ করেছে যে ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরের দিকে ঝুঁকছেন। এছাড়া বৈধ আমদানি চালান কাস্টমস কর্তৃক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়া আবার বিজিবি সদস্যরা তা আটক করছে। সেখানে দুই-তিন দিন পণ্য চালান আটকে থাকছে। সেইসঙ্গে পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। আমদানি-রফতানি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিজিবি আর কাস্টমসের মধ্যে সমন্বয় দরকার। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, ভারতের সঙ্গে অল্প সময়ে দ্রুত এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি করা যায় বলে সবাই ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় সুষ্ঠু বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সপ্তাহে সাত দিন বাণিজ্য সেবা চালু থাকলেও ব্যবসায়ীরা তার সুফল পাচ্ছে না। বাণিজ্য প্রসার করতে হলে বৈধ সুবিধা প্রদান ও অবকাঠামো উন্নয়নের বিকল্প নেই। আমদানি-রফতানি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন সমস্যা আর অনিয়মে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এখনও সাধারণ পণ্যাগারে কেমিক্যাল পণ্য খালাস করা হয়। বহিরাগতরা অবাধে প্রবেশ করে বন্দরে। এছাড়া ব্যাপক কড়াকড়ি ও নিত্যনতুন নিয়ম চালু করায় আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব ঘাটতি বেড়েছে। বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার শহীদুল ইসলাম জানান, পণ্য চালান খালাসে আগের চেয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বেড়েছে কাস্টমসে। শুল্ক ফাঁকি বন্ধে কড়াকড়ি আরোপ করায় কিছু ব্যবসায়ী এ বন্দর দিয়ে আমদানি কমিয়েছেন। বিশেষ করে রাজস্ব বেশি আসে, এমন পণ্য কম আমদানি হচ্ছে। এতে রাজস্ব কিছুটা ঘাটতি হয়েছে। তবে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন তা পূরণের। ব্যবসায়ীদের বৈধ সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে তারা আন্তরিক হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বেনাপোল বন্দর পরিচালক প্রদোষ কান্তি দাস জানান, বন্দরে সব ধরনের অনিয়ম ও শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করা হচ্ছে। জায়গা সংকটে বর্তমানে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে তারা নতুন করে জায়গা অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন কাজ শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন: