ঢাকা রবিবার
০৫ মে ২০২৪
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্বে ইস্পাত চাহিদা বাড়ছে


নিউজ ডেস্ক
126

প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০১৯
বিশ্বে ইস্পাত চাহিদা বাড়ছে



স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্ব অর্থনীতির আকার যত বাড়ছে, দেশে দেশে ইস্পাতের চাহিদাও তত বাড়ছে। কয়েক বছর ধরেই ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদায় ধারাবাহিক চাঙ্গাভাব বজায় রয়েছে। আগামী দিনগুলোতেও বৈশ্বিক ইস্পাত চাহিদা চাঙ্গা থাকতে পারে। তবে ২০১৯ ও ২০২০ সালে পণ্যটির বৈশ্বিক চাহিদায় বিদ্যমান চাঙ্গাভাবের গতি কমে আসতে পারে। মূলত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়ে আসা, চীনা উৎপাদন খাতের মন্দাভাব এবং চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের জের ধরে এ সময় ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের (ডব্লিউএসএ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স ও মেটাল বুলেটিন। ডব্লিউএসএর প্রতিবেদনের সর্বশেষ শর্ট রেঞ্জ আউটলুকে বলা হয়েছে, চলতি বছর শেষে বিশ্বব্যাপী ইস্পাতের সম্মিলিত চাহিদা দাঁড়াতে পারে ১৭৩ কোটি ৫০ লাখ টনে। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা বাড়তে পারে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০১৮ সালে ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদায় ২ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় ছিল। অর্থাৎ বছরান্তে ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা বাড়লেও প্রবৃদ্ধির গতি আগের তুলনায় কমে আসছে। প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিতায় ২০২০ সালে ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা ১৭৫ কোটি ২০ লাখ টনে দাঁড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ডব্লিউএসএ, যা আগের বছরের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে পণ্যটির বৈশ্বিক চাহিদা বাড়তে পারে ১ কোটি ৭০ লাখ টন। তবে ২০২০ সালেও ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদায় প্রবৃদ্ধির গতি চলতি বছরের তুলনায় কমে আসতে পারে। এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড স্টিল ইকোনমিকস কমিটির চেয়ারম্যান আল রেমেইথি বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি যখন বড় ধরনের অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়ে যায়, তখন সব ক্ষেত্রেই এর প্রভাব পড়ে। ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদাও এর বাইরে নয়। চলতি ও আগামী বছর পণ্যটির বৈশ্বিক চাহিদায় বিদ্যমান প্রবৃদ্ধি কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি আগের তুলনায় শ্লথ হয়ে এসেছে। চীনের উৎপাদন খাত আশার খবর শোনাতে পারছে না। একই সঙ্গে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে অন্যান্য দেশেও। ব্রেক্সিট ঘিরে অনিশ্চয়তার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে পুরো ইউরোপ। সব মিলিয়ে পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতে একটা সংকটময় অবস্থা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা প্রবৃদ্ধিতে লাগাম টানতে পারে। চীন বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদক দেশ। একই সঙ্গে দেশটি ইস্পাতের শীর্ষ ভোক্তাও। এ কারণে চীনে পণ্যটির উৎপাদন ও চাহিদার উত্থান-পতন বৈশ্বিক ইস্পাত শিল্পে প্রভাব ফেলে। ডব্লিউএসএর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে চীনসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোয় ইস্পাতের সম্মিলিত চাহিদায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় ছিল। চলতি ও আগামী বছর এসব দেশে পণ্যটির সম্মিলিত চাহিদা প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৪ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। তবে ২০১৯ সাল শেষে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোয় (ইউরোপ-আমেরিকা) ইস্পাতের সম্মিলিত বৈশ্বিক চাহিদায় দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা যেতে পারে। আগামী বছর নাগাদ ইস্পাতের চাহিদা প্রবৃদ্ধি সামান্য বেড়ে দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোয় ইস্পাতের সম্মিলিত চাহিদা প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৮ শতাংশ। ডব্লিউএসএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর বৈশ্বিক ইস্পাত চাহিদার অর্ধেকের বেশি চীন এককভাবে ব্যবহার করে। বাণিজ্যযুদ্ধের জের ধরে দেশটির অর্থনীতির গতি তুলনামূলক শ্লথ হয়ে এলেও ইস্পাতের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমছে না। মূলত এ কারণেই চলতি ও আগামী বছর ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা বর্তমানের তুলনায় কমতির দিকে থাকবে। কিন্তু নেতিবাচক প্রবণতায় নেমে আসবে না।

আরও পড়ুন:

বিষয়: