ঢাকা বৃহস্পতিবার
০২ মে ২০২৪
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ট্যানারি শিল্পের জন্য খসড়া নীতিমালা: শিল্প মন্ত্রণালয়


নিউজ ডেস্ক
80

প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
ট্যানারি শিল্পের জন্য খসড়া নীতিমালা: শিল্প মন্ত্রণালয়



ডেক্স রিপোর্ট : দেশে গবাদি পশু জবাইয়ের পর চামড়া ছাড়ানোর সময় সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না।  জবাইয়ের পর চিহ্নিত করার জন্য চামড়ায় ছেঁকা দেয়া হয়। সংরক্ষণ ও পরিবহন কৌশলও সঠিক নয়। ফলে বাংলাদেশের ট্যানারিগুলো এখনো চামড়া প্রক্রিয়াজাতে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে সক্ষম হচ্ছে না। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালার খসড়ায় এসব তথ্য তুলে ধরেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি খাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। ২০২১ সাল নাগাদ এ খাত থেকে মোট রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ কোটি ডলার। এছাড়া জিডিপিতে এ শিল্পের অবদান বিদ্যমান দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করার লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দেয়া হয়েছে। এসব কারণেই খাতটির উন্নয়নে নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। শিল্প মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ‘চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা-২০১৯’ শীর্ষক একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম বলেন, একটি নীতিমালা প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলমান। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়াজাত পণ্যের বাজার পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধির মাধ্যমে জিডিপিতে পণ্যটির অবদান বাড়াতে এ নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে অবকাঠামো, আইনি ও ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। দেশে চামড়া এখনো শিল্প আন্তর্জাতিক মান ধরে রাখা যাচ্ছে না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে শিল্প সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নির্ধারণ করে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে কমপ্লায়েন্ট হওয়াটা সময়সাপেক্ষ বিষয়। চামড়া শিল্প পুরোপুরি কমপ্লায়েন্ট না, তা কিন্তু ঠিক নয়। অনেকেই তো আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ব্যবসা করছেন। সবাই হয়তো পারেননি। কিন্তু পর্যায়ক্রমে সবাই আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হচ্ছেন। খসড়া নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি খাত হিসেবে তৈরি পোশাক শিল্পের মতো চামড়া শিল্পকেও অনুরূপ সুযোগ-সুবিধা দেয়া প্রয়োজন। তবে কাঁচামাল সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত পর্যায়েই শিল্পটি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বলে খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, স্থানীয় উৎপাদকদের উৎপাদনশীলতা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার উপযোগী নয়। স্থানীয় কারখানাগুলোর আন্তর্জাতিক বাজারের ফ্যাশন অনুসরণ ও বিপণনের ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার ঘাটতি রয়েছে। যার ফলে তারা অসম প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয়। বাংলাদেশের চামড়া খাতের উদ্যোক্তারা বিশ্ববাজারের প্রধান প্রধান ব্র্যান্ড ও রিটেইলারের পণ্য সম্পর্কে যথাযথ ধারণা রাখেন না। সেজন্য তারা সময়োপযোগী ফ্যাশন পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছেন না। বাজারের ভবিষ্যৎ চাহিদা পর্যবেক্ষণের সক্ষমতাও তাদের কম। অধিকাংশ ট্যানারির সঙ্গেই ক্রেতাদের প্রত্যক্ষ কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু গুটিকয়েক স্থানীয় ট্যানারি বড় বড় ব্র্যান্ড ও রিটেইলারের সঙ্গে সরাসরি কাজ করে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহীন আহমেদ বলেন, কোনো একটি খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আমার জানামতে এটাই প্রথম। এটা খুবই ইতিবাচক একটি উদ্যোগ। দেশের চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পকে টেকসই করতে নীতিমালাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি। বাংলাদেশের ২২০টি ট্যানারিতে উৎপাদিত প্রক্রিয়াজাত চামড়ার মধ্যে ৭৬ শতাংশের বেশি রফতানি করা হয়। বছরে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন বর্গফুট কাঁচা চামড়া (হাইড ও স্কিন) প্রক্রিয়াজাত করা হয়। দেশে বর্তমানে ৯৩টি বড় পাদুকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত। এসব প্রতিষ্ঠান ৩৭ কোটি ৮০ লাখ জোড়া জুতা তৈরি করে। নীতিমালায় গবাদি পশু পালন ও ব্যবস্থাপনা কৌশল, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠাকরণ, উন্নত ট্যানিং কৌশল, শ্রমিকদের দক্ষতার পর্যায়, পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম, কার্যকর বর্জ্য পানি শোধন প্রক্রিয়া, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও কঠিন বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ, কার্যকর পানি ও পয়ঃশোধনাগার প্রভৃতি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

বিষয়: