ঢাকা বৃহস্পতিবার
০২ মে ২০২৪
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বেয়ার মার্কেটে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার


নিউজ ডেস্ক
77

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারীফেব্রুয়ারি ২০১৮
বেয়ার মার্কেটে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার



স্টাফ রিপোর্টার: প্রচণ্ড অস্থিরতা বিরাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে। প্রায় প্রতিদিনই কমছে শেয়ারের দাম ও মূল্যসূচক। বেশ কিছুদিন ধরে এই ধারা চললেও ডিসেম্বরে এসে তা তীব্রতর হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে চলতি ডিসেম্বর মাসটি গত প্রায় ৯০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মন্দ ডিসেম্বর মাস। ১৯৩১ সালের পর এত মন্দ সময় আর কখনও পার করেনি ডিসেম্বর মাস। অন্যদিকে গত এক সপ্তাহে দশকের সবচেয়ে বড় দরপতন হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে চলমান টানাপোড়েন, সুদহার বৃদ্ধি ও ফেডারেল সরকারের একাংশের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিতে ট্রাম্পের হুমকি ইত্যাদি কারণে বাজারে ধস নেমেছে। বাজারের সবগুলো সূচক নিম্নমুখী ধারায় রয়েছে। তার মধ্যে আলোচিত নাসডাক কমেছে ২০ শতাংশের কাছাকাছি। দুই মাসের মধ্যে শেয়ার সূচক ২০ শতাংশ কমলে সেটাকে ‘বিয়ার মার্কেট’ বা পতনপ্রবণ শেয়ারবাজার বলা হয়। সে হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার বিয়ার মার্কেটে পরিণত হয়েছে। খবর বিবিসি, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, রয়টার্স ও সিএনবিসির। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এশিয়া এবং ইউরোপের বাজারেও এখন শেয়ার বিক্রির হিড়িক পরেছে। তাতে দর পতন অনিবার্য সঙ্গী হয়ে উঠেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র-চিন বাণিজ্যযুদ্ধের সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব, বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার পূর্বাভাস ইত্যাদি বিষয় বিশ্বপুঁজিবাজারে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব জুড়ে শেয়ারবাজারে মন্দা চললেও এর তীব্রতা সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। চলতি ডিসেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১০ শতাংশের মতো কমেছে, ১৯৩১ সালের পর কোনো ডিসেম্বর মাসে এই সূচকের এতোটা পতন হয়নি। বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, ডাউ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজে এই সপ্তাহে ২০০৮ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ সূচকের পতন দেখেছে। এসঅ্যান্ডপির ক্ষেত্রেও সপ্তাহে ৭ শতাংশ সূচক কমেছে। ২০১১ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে এটাই সর্বোচ্চ গড় দরপতনের ঘটনা। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কয়েক বছর ধরে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের লাভের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা মূলধন সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। করপোরেট মুনাফার বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে অনেকে শেয়ারবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তাছাড়া স্থানীয় ও বৈদেশিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ায় অনেকেই উদ্বেগে পড়েছে। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে ইউএস ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার তুলে দেয় এবং তা আগামী বছরেও তা বজায় থাকার কথা বলে। ২০১৯ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয় ফেড ব্যাংক, যা সেপ্টেম্বরে দেওয়া ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম। ওয়েস্টপ্যাক নামের একটি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতিবিদ এলিয়ট ক্লার্ক বলেন, ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক কূটনীতির বিষয়টি বাজারের অনিশ্চয়তাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এদিকে সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক দরপতন বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। বরং এটি দীর্ঘমেয়াদী পতনমুখী প্রবণার অংশবিশেষ। বিশ্ব পুঁজিবাজারের পতন ধারা বা মন্দা ২০১৯ সালের একটা উল্লেখযোগ্য সময় পর্যন্ত চলতে পারে।

আরও পড়ুন:

বিষয়: