স্টাফ রিপোর্টার : অবসায়িত পিপলস লিজিং এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের নিরিক্ষা প্রতিবেদন মঙ্গলবার, ০৩ মার্চ হাইকোর্টে জমা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিরিক্ষা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস। অতিরিক্ত ৪৫ দিনে প্রতিবেদনটি সম্পন্ন করেছে একনাবিন।
প্রতিষ্ঠানটির গত চার বছরের আয় ব্যয় অর্থ্যাৎ ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কোম্পানির যাবতীয় কার্যক্রম অডিটের দায়িত্ব নিয়েছিল একনাবিন। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পিপলস লিজিংয়ের সম্পদ মূল্যায়নের কাজে বহিঃনিরীক্ষক হিসেবে একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু প্রথমবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে মার্চ (২০২০) পর্যন্ত সময় চেয়ে আবেদন করলে ৪৫ দিন সময় দেন হাইকোর্ট।
এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ও পিপলসের অবসায়ক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমাদের কাছে একনাবিন ৫৬০ পৃষ্টার একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আগামীকাল, ০৩ মার্চ সেই প্রতিবেদনটি হাইকোর্টে পাঠাবো আমরা। তবে এটি বিশ্লেষণ করতে কিছু সময়ের প্রয়োজন। বিশ্লেষণ শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত হাইকোর্টে জানানো হবে।
প্রতিষ্ঠানটির আমানত ও ঋণের পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি জানান, এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে যে অংক জানানো হয়েছে সে রকমই হতে পারে। আবার কিছু কম বেশিও হতে পারে।
গত বছরের ২১ মে বাংলাদেশ ব্যাংক পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নের আবেদন করলে ২৬ জুন অর্থমন্ত্রণালয় তা অনুমোদন দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক পিপলস লিজিং থেকে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করে। পরবর্তীতে গত ১৪ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিএম মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান খানকে অবসায়ক নিয়োগ দেয়া হয়।
পিপলস লিজিংয়ের বর্তমান আমানত ২ হাজার ৩৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে। বাকি ৭’শ কোটি টাকা ৬ হাজার ব্যক্তি শ্রেনীর আমানত। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি থেকে ঋণ নেওয়া অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৪৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। এটি মোট ঋণের ৬৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। খেলাপি ঋণের বড় অংশই নিয়েছে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা। ধারাবাহিকভাবে লোকসানের কারণে ২০১৪ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি লভ্যাংশ দিতে পারছে না। তবে আমানতের বিপরীতে কাগজে কলমে গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ২৬৯ কোটি টাকার সম্পদ দেখানো হলেও বাস্তবে তিন ভাগের এক ভাগও নেই বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর পিপলস লিজিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে অনুমোদন পায়। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।
সূত্র: অর্থসূচক